ঐতিহ্যবাহী বোল্লা রক্ষাকালী মন্দিরে এবার থেকে সারা বছর মা রক্ষাকালীর রূপ দর্শনের সুযোগ পাবেন ভক্তরা

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী বোল্লা রক্ষাকালী মন্দিরে এতদিন বছরে মাত্র চারদিন মায়ের রূপ দর্শনের সুযোগ পেতেন ভক্তরা। বাকি সময়টায় মূর্তি ছাড়াই চলত পুজার্চনা। দীর্ঘদিনের এই আক্ষেপের অবসান ঘটিয়ে, এবার সারা বছর মা রক্ষাকালীর রূপ দর্শনের সুযোগ করে দিল মন্দির কমিটি।  আনুষ্ঠানিকভাবে মা রক্ষাকালীর তিন কেজি ওজনের রুপার মুখাবয়ব স্থাপন করা হলো মন্দিরে। দিনভর পুজো, মিষ্টান্ন ভোগ, যজ্ঞ এবং ভক্তিমূলক গানের অনুষ্ঠান ঘিরে উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড়। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত অরূপ চক্রবর্তী জানান, “এতদিন ভক্তরা বছরে মাত্র চারদিন মায়ের রূপ দর্শন করতেন। ভক্তদের দীর্ঘদিনের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে মায়ের রুপার মুখাবয়ব তৈরি করা হয়েছিল। আজ তা প্রতিস্থাপন করা হল। এখন থেকে সারা বছর এই অবয়বের মাধ্যমে মায়ের দর্শন মিলবে।”

তিনি আরও জানান, এদিন মন্দির চত্বরে মিষ্টান্ন ভোগ এবং যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়, সন্ধ্যায় হয় ভক্তিমূলক সঙ্গীতের আয়োজন। মন্দির কমিটির ম্যানেজার মানস রঞ্জন চৌধুরী জানান, “অনেকদিন ধরেই পরিকল্পনা চলছিল। প্রায় এক বছর আগে তিন কেজি রুপায় তৈরি এই মুখাবয়ব প্রস্তুত করা হয়েছিল। অবশেষে ভক্তদের ইচ্ছা পূরণ হল। এখন আর কাউকে হতাশ হতে হবে না।” মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রুপার মুখাবয়বে সোনার টিকলি, নাকের নথ এবং কানের দুল পরানো হয়েছে। এছাড়া বেনারসি শাড়ি পরিয়ে সাজানো হয়েছে মায়ের নতুন রূপ। নতুন মুখাবয়বে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করতে সকাল থেকেই ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে মন্দির প্রাঙ্গণে।

প্রতিবছর রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো হয়। এই সময় বিশাল মেলা বসে, যা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হিসেবে পরিচিত। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এই মেলায় উপস্থিত হন, এমনকি বাংলাদেশ থেকেও ভক্তদের আগমন ঘটে। মেলার সময় ছাড়া সারা বছর বহু ভক্ত পুজো দিতে আসেন, কিন্তু এতদিন মায়ের রূপ দর্শন করতে পারতেন না। এবার তাঁদের সেই ইচ্ছা সারাবছর পূর্ণ হবে।