বিশ্ব ব্লাড ক্যান্সার মাস উদযাপনের জন্য শিলিগুড়িতে ব্লাড ক্যান্সার-জয়ীদের নিয়ে যশোদা হাসপাতালের সম্মেলন

বিশ্ব ব্লাড ​​ক্যান্সার মাস উদযাপনের জন্য শিলিগুড়িতে ব্লাড ক্যান্সারের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া মানুষদের নিয়ে একটি ব্লাড ক্যান্সার সারভাইভারস সামিটের আয়োজন করেছিলো যশোদা হাসপাতাল হায়দ্রাবাদ।সম্মেলনে সিনিয়র হেমাটোলজিস্ট ও বিএমটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ গণেশ জয়শেতওয়ার বলেন, ব্লাড ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ‘ব্লাড ক্যান্সার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য এবং সফল চিকিৎসার পরে এই রোগীরা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন’ এই বিষয়টির উপর জোর দেওয়ার জন্যই যশোদা হাসপাতাল হায়দরাবাদ শিলিগুড়িতে ব্লাড ক্যান্সার সারভাইভার্স মিটের আয়োজন করেছে। এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করতে মানুষকে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করা।

তিনি বলেন, ব্লাড ক্যান্সার, যা হেমাটোলজিক ক্যান্সার নামেও পরিচিত, এমন এক ধরনের ক্যান্সার যা রক্ত, অস্থি মজ্জা বা লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে প্রভাবিত করে। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এর অন্তর্গত, যেমন লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা এবং একাধিক মায়োলোমা। সবরকম ক্যান্সারের মধ্যে ব্লাড ক্যান্সারের ভাগ ৮.২% এবং প্রতিবছর ভারতে ১ লক্ষ মানুষের মধ্যে ৫.৫টি ব্লাড ক্যান্সারের ঘটনা দেখা যায়। এই হিসেবে, প্রতি বছর প্রায় ৮০,০০০ নতুন ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয় করা হচ্ছে এবং প্রতি ২০ সেকেন্ডে ভারতে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হচ্ছে।ডাঃ গনেশ বলেন, এই বছরের বিশ্ব ব্লাড ক্যান্সার দিবসের থিম হল ‘আজকের রোগ নির্ণয়, আগামীর রোগ নির্মূলন’। ব্লাড ক্যান্সারের দ্রুত সনাক্তকরণ সম্পূর্ণ নিরাময়ের সম্ভাবনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে। ডাঃ গণেশ জানান, বর্তমানে বেশিরভাগ ব্লাড ক্যান্সার আধুনিক কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ইত্যাদির মতো উন্নত চিকিৎসার সাহায্যে নিরাময়যোগ্য। প্রকৃতপক্ষে, এইসব চিকিৎসাপদ্ধতি এখন আরও বেশি কার্যকর ও কম ক্ষতিকারক।

অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রেও অসাধারণ উন্নতি হয়েছে এবং এখন সব রোগীর ক্ষেত্রেই নিরাপদে ব্লাড ক্যান্সার নিরাময়ের জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্লাড ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা অনেক রোগী ও অনেক সফল বিএমটি রোগী শিলিগুড়িতে এই সারভাইভার মিটে যোগ দিয়েছিলেন। ডাঃ গণেশ যশোদা হাসপাতাল হায়দ্রাবাদ-এর হেমাটোলজি ও বিএমটি বিভাগের বেশ কিছু কৃতিত্বের উল্লেখ করেছেন। যেমন, (১) ভারতের প্রথম সফল ডাবল হ্যাপলো-আইডেন্টিক্যাল স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট, (২) ৬৭ বছরে হ্যাপলো-আইডেন্টিক্যাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট, (৩) বিশ্বের প্রথম একক আন্তর্জাতিক ডোনার স্টেম সেল ব্যবহার করা হয়েছে দুই ভাইয়ের বিএমটি-এর জন্য, (৪) প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে ভারতের প্রথম সফল এক্স ভিভো টি হ্যাপলো-আইডেন্টিক্যাল বিএমটি। তিনি জানান, যশোদা হাসপাতাল হায়দ্রাবাদ গত ৮ বছর ধরে ৩০০টিরও বেশি সফল অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপন করেছে। সর্বশেষে ডাঃ গণেশ বলেন, ব্লাড ক্যান্সারেই জীবনের ইতি নয়, এটি আসলে আশা ও নিরাময়ের এক নতুন যাত্রার সূচনা।