বর্ষা বিদায় নেওয়ার সময় এসে গেছে। মা আসছেন। তারই জানান দিচ্ছে আকাশের বাতাস। আসন্ন বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। এই পুজো ঘিরে পুজো উদ্যোক্তারা যেমন ব্যস্ত। পাশাপাশি আপামর রাজ্যবাসী পুজোর কেনাকাটায় ব্যস্ত। তারই মাঝে যারা ভ্রমণ পিপাসু তারা ইতিমধ্যেই ছক কষে ফেলেছেন কোথায় তারা বেড়াতে যাবেন। উত্তরবঙ্গ প্রকৃতি পর্যটনে একটা বড় জায়গা করে নিয়েছে। উত্তরবঙ্গে যেমন রয়েছে পাহাড় তেমনই রয়েছে জঙ্গল ও চা বাগানে ঘেরা ডুয়ার্স। যদিও বর্ষার তিনমাস পশু পাখিদের প্রজননের জন্য জঙ্গল থাকে বন্ধ।
সেই তিনমাস সময় অতিক্রান্ত হবার পর আগামী ১৬ই সেপ্টেম্বর পর্যটকদের জন্য খুলতে চলেছে জঙ্গল। উত্তরবঙ্গের সমতলে রয়েছে যেমন গরুমারা জাতীয় উদ্যান, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান ও বক্সা ব্যাঘ্রপ্রকল্প। পাশাপাশি পাহাড়েও রয়েছে বেশ কয়েকটি জঙ্গল। যে সব পর্যটকরা সবুজ ভালোবাসে। সবুজের মধ্যে গা ভাসিয়ে দিতে চানা তারা জঙ্গল খোলার শুরুতেই সেই সৌন্দর্য অবলোকন করতে ছুটে আসেন ডুয়ার্সের জঙ্গলে। তিন মাস জঙ্গল বন্ধ থাকার পর জঙ্গল হয়ে ওঠে মোহময়ী। গাছে যেমন নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘট, তেমনই পশু পাখিদেরও অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র তৈরী হয়। এই সময় জঙ্গলে থাকে একটা অন্যরকম সৌন্দর্য।
প্রচুর সংখ্যক পর্যটক পুজোর আগেই কিছুটা সময় নিয়ে ছুটে আসেন ডুয়ার্সের জঙ্গলে। আর জঙ্গলে ঘুরতে এসে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ জিপসি গাড়ি। তবে তিনমাস জঙ্গল বন্ধ থাকায় গাড়িগুলিও পড়ে থেকে গাড়ির কলকব্জা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গাড়িতে ধরেছে জং। কিন্তু আর সময় নেই হাতে। পর্যটকটা এলো বলে। তাই তড়িঘড়ি জিপসি গাড়িগুলি সারাই করার তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে। জিপসি গাড়ির চালক সহ গাইডদের মধ্যে সতষ্ফুর্ততা আনতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দিয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ী রাজ বাসু জানান, আসামের জঙ্গলের একমাস আগে ডুয়ার্সের জঙ্গল খুলে যায়। তাই একমাস অতিরিক্ত সময়ে আমরা প্রচুর সংখ্যক পর্যটক পাই। তবে ডুয়ার্সের পাশাপাশি পাহাড়ের জঙ্গল খুললেও সেপ্টেম্বর মাসে আমরা পর্যটকদের পাহাড়ের জঙ্গলে যেতে বারণ করি।
কারণ এই সময় প্রচুর জোকের উপদ্রব থাকে। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে গোটা শীতকাল পর্যটকরা পাহাড়ের জঙ্গলে যেতে পারে। বরং সে সময় প্রচুর দেশ বিদেশের পাখি দেখতে পারবে পর্যটকরা। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ডুয়ার্সের জঙ্গলে প্রচুর সংখ্যক দেশ বিদেশের পর্যটকদের ভিড় থাকবে বলে আশাবাদি পর্যটন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে জিপসি গাড়ির চালকরা।