পুজো মানেই যেমন সাজগোজ, কেনাকাটা তেমনই ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে পুজো মানেই ঘুরতে যাওয়া। অনেকে পুজোর ভিড় পছন্দ করেন না। তারা সে সময় ছুটে যান পর্যটন স্থলগুলিতে। উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্সের জঙ্গলে প্রতি বছর পুজোর সময় পর্যটকদের ঢল নামে। ইতিমধ্যেই ট্রেন, বাস কিংবা বিমানের টিকিট সম্পুর্ন বুকিং হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তুলনামুলকভাবে হোটেল বুকিং হয় নি। মুলত পুজোর সময় দার্জিলিং কিংবা সিকিম বা ডুয়ার্সে ঘুরতে আসার জন্য তিনমাস আগে থেকেই ট্রেন কিংবা বাস ও বিমানের টিকিট কাটার প্রবণতা থাকে সকলের। দেরী হলেই আর টিকিট পাওয়া যায় না।
এদিকে যখন পর্যটকরা টিকিট কেটেছিলেন তখন আর জি কর কাণ্ড ঘটে নি। বর্ষায় সিকিম-শিলিগুড়ির লাইভ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হলেও। শীঘ্রই তা খুলে যাওয়ার আশা ছিল। তবে বর্ষার পরও ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তাই তুলনামুলকভাবে হোটেল বুকিং কম হওয়ায় এই জোড়া সমস্যার প্রভাব কী পড়তে চলেছে পুজোর এই পর্যটন মরশুমে? আর জি কর কাণ্ড নিয়ে আন্দোলন ক্রমশ জোড়ালো হচ্ছে। এই ঘটনার পর পাশাপাশি রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতাও। আন্দোলন কখন কোনদিকে যাবে তা আগাম বোঝা মুশকিল। সে কারণেই কী পর্যটকরা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না তারা কোথাও ঘুরতে যাবেন কিনা? কিংবা তারা কি এই ঘটনার পর ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ঘুরতে আসা স্থগিত রাখলেন? এই প্রশ্ন উঠছে।
তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশাবাদী প্রতি বছরের মতো এ বছরও পর্যটকদের ঢল নামবে পুজোর পর্যটন মরশুমে। বর্ষায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধসে খারাপ হলেও দ্রুত তা সারাই করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খুলে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তাছাড়া উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্সের মতো পর্যটন স্থলগুলি যথেষ্টই শান্তিপূর্ণ। আন্দোলনের কোনো প্রভাব নেই এই জায়গাগুলিতে। পযটন ব্যবসায়ী রাজ বাসুর কথায়, যারা বাংলায় জন্মেছে পর্যটনটা তাদের রক্তে মিশে গিয়েছে কোভিডের সময়ও একটু সুযোগ পেলেই পর্যটকরা বেড়াতে এসেছেন। সিকিমের বিপর্যয়ের সময়ও যেখানে গ্যাপ পেয়েছে সেখানেই বেড়াতে এসেছে। উত্তরবঙ্গের এই রিজিয়নের পর্যটন মুলত, দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম ও ডুয়ার্স নিয়ে।
১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এতদিন বন্ধ ছিল। এখন খুলে গিয়েছে। তাছাড়া বিকল্প রাস্তা তো খোলাই রয়েছে। সিকিম ঘুরতে গেলে লাভা হয়ে ঘুরে গেলে নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে পারবেন পর্যটকরা। পথে কালিম্পংয়ের কোনো একটি গ্রামে রাত কাটিয়ে সেখানকার গ্রামীণ পর্যটনের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উপরি পাওনা হবে তাদের। তাই একটা অসুবিধা হলেও আরেকটা সুবিধা যোগ হয়ে গেছে। পর্যটকরা যে সব জায়গায় ঘুরতে আসবেন সেখানে গন্তব্যস্থলগুলি যথেষ্টই শান্তিপুর্ন। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সেখানকার বাসিন্দারা। এখন দেখার সব কিছু কাটিয়ে পুজোর মরশুমে কতটা পর্যটকের ঢল নামবে।