কিছু এলাকায় নতুন করে দেখা মিলছে পরিযায়ী পাখি দের

পাখায় ভর করে আকাশে পাড়ি জমিয়ে চিন রাশিয়া, ইউরোপের দেশগুলি থেকে তারা আসে উত্তরবঙ্গে। গজলডোবা, ফুলবাড়ি ব্যারাজ এবং তিস্তার বিস্তীর্ণ এলাকার বুকে এসে নামে নর্দান টিল, রুডিসেল ডাক, ফ্যালকেটেড ডাক, মারগেঞ্জার থেকে আরও কত পরিযায়ী। কিন্তু পাখি আসা যেন কমা শুরু করেছে গত বছর থেকেও। এবারও তাই। গত বছর জানুয়ারিতেই দেখা গিয়েছে গজলডোবা এলাকায় পরিযায়ী কিছু কমেছে। এ বারের পরিস্থিতি জানুয়ারিতে পাখি গণনা হলে পুরোপুরি স্পষ্ট হবে।’’বনাধিকারিক, পরিবেশপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, সিকিমে বিপর্যয়ের পরে, তিস্তার সমতলে বিপুল পলি জমেছে। গজলডোবা ব্যারাজের আশপাশে তিস্তার চরে, পাড়ে পরিযায়ী পাখিদের ডেরায় পলি জমেছে। পাখির খাবার বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ, মাছ, গেড়ে-গুগলি পলির কারণে পর্যাপ্ত মিলছে না। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তার চরেও এবার ভাটার টান। শুধুমাত্র জলপাইগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে রাখালদেবীর একটি জলাশয়ে পরিযাযীর ভিড় রয়েছে। গত বছরে ওই এলাকায় ইতিউতি পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছিল। এ বছর ঝাঁকে-ঝাঁকে বালিহাস থেকে নানা ধরণের পরিযায়ী এসেছে।

গজলডোবা ব্যারাজ লাগোয়া কাঠামবাড়ি এবং আপালচাঁদের জঙ্গলের কিছু এলাকায় নতুন করে দেখা মিলছে পরিযায়ীদের। পরিযায়ীদের ভিড় বেড়েছে জলপাইগুড়ি শহরে করলা নদীর দুই পাড়েও। ফুলবাড়ি ব্যারাজে পরিয়ায়ী এসেছে। তবে এ বার প্রজাতি কম বলে দাবি। তিস্তায় পলির কারণে পাখির খাবার কমেছে। তাই পরিযায়ীর আনাগোনা সেখানে কমছে। আবার কিছু নতুন জায়গায় পরিয়ায়ী নজরে আসছে।’’ পরিবেশপ্রেমী তথা পাখি পর্যবেক্ষক রাজা রাউত বলেন, “এ বার পরিযায়ী পাখির সংখ্যা সীমিত। যত ধরণের পাখি প্রতিবার আসে, এ বার দেখা মিলছে না।’’ তিনি জানান, যে পাখিগুলো আসছে, সেগুলি সংখ্যায় বেশি। তিস্তার বিপর্যয়ের আগে যে পরিমাণ পাখি আসতো এ বারও তেমন নেই। এখনও ভিন্‌ দেশ থেকে পাখি আসছে।  জানুয়ারি মাস জুড়েই পাখি গণনা হবে।

জলাগুলো বুজিয়ে ফেলার প্রবণতা নিয়ে পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেই উদ্বিগ্ন। পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের অন্যতম কর্তা অনিমেষ বসুর পর্যবেক্ষণ, ‘‘জলপাইগুড়ির দোমহনি বিল থেকে এলাকার চাষিরা পাম্প দিলে জল বার করে লাগোয়া জমিতে চাষ করেন। এ সব কারণে ওই বিলে পাখি কমবে। অনেক বিল কচুরি পানায় ভরে গেলেও পরিষ্কার করার কেউ নেই।’’