২০২৩ ভারত থেকে সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিমের দ্রুত বর্ধনশীল বাজার হয়ে উঠবে কলকাতা

২০২২ সালে সাউথ আফ্রিকা ভারতীয় পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের অন্যতম পীঠস্থান হয়ে উঠেছে। সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম তার ক্যাম্পেনের মাধ্যমে সাউথ আফ্রিকার বিশেষ দ্রষ্টব্য স্থানগুলি যেভাবে ভারতীয়দের সামনে তুলে ধরেছে তাতে ভারতীয়রা তাঁদের অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজিমের গন্তব্যস্থল হিসেব সাউথ আফ্রিকাকেই বেছে নিচ্ছেন। মহামারির পর থেকে অর্থাৎ ২০২২পর্যন্ত সাউথ আফ্রিকায় ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। উল্লেখ্য, গতবছরের তুলনায় সাউথ আফ্রিকায়  ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা প্রায় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত রেইনবো নেশন ৫০,০০০ ভারতীয়কে সাউথ আফ্রিকায় স্বাগত জানিয়েছে। মহামারির পরবর্তী কালে সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম তার পর্যটনের পুনরুদ্ধার বছরের শুরুতেই সাউথ আফ্রিকায় ৩৩,৯০০-এরও বেশি পর্যটক আনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল। বলাবাহুল্য,  সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম তার সেই লক্ষ্যমাত্রায় অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে।ভারতীয় পর্যটকদের এই ক্রমবর্ধমান গতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে ১৩ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের প্রধান শহর তথা – কলকাতা, চেন্নাই, হায়দ্রাবাদ এবং মুম্বাইতে রোডশোর আয়োজন করছে সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম। এই রোডশো-তে অংশগ্রহণকারী ৩৫ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল, ভারতীয় গ্রাহক ও বিজনেস পার্টনারদের জন্য বিশেষ অফার দিচ্ছে সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম। উল্লেখ্য, ব্যাবসা বাড়াতে অংশগ্রহণকারী বিজনেস পার্টনাররা ওয়েস্টার্ন কেপ, কোয়াজুলু-নাটাল, গৌতেং, লিম্পোপো এবং ইস্টার্ন কেপ-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলিতেও প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিমের পক্ষ থেকে কলকাতায়  অনুষ্ঠিত এই রোডশোটি ভারত এবং সাউথ আফ্রিকার প্রধান বিজনেস পার্টনারদের মধ্যে সম্পাদিত ব্যবসায়িক চুক্তিগুলিকে  ভালভাবে কার্যকর করার পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের পর্যটন সংক্রান্ত পার্টনারশিপের পথ প্রশস্ত করবে। ২০২২ সালে সাউথ আফ্রিকায় ভারতীয় পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান হার পর্যটনের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতকে আরও দুই ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। যা ভারতকে পর্যটনের আন্তর্জাতিক মানচিত্রে ষষ্ঠ স্থানে পৌঁছে দিয়েছে। সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম ২০২৩ সালে ভারত থেকে আগত পর্যটকদের লক্ষমাত্রা স্থির করেছে ৭২ শতাংশ। এই লক্ষমাত্রা পূরণের জন্য সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম একটি রোড ম্যাপও তৈরি করেছে। এছাড়াও সাউথ আফ্রিকান  ট্যুরিজিম বোর্ড  সাউথ আফ্রিকায় ভারতীয় পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান রেট বজায় রাখতে লাক্সারি এক্সপেরিয়েন্স, অফবিট অ্যাকটিভিটিস, অ্যাডভ্যান্স এমআইসিই, অ্যাডভেঞ্চার ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ওয়াইল্ড লাইফ ও রান্নার ক্ষেত্রেও ভারতীয়দের গুরুত্বকে প্রাধান্য দিতে বিশেষ ভাবে সচেষ্ট। যাতে কোন ভাবেই ভারতীয় পর্যটকদের কোন অসুবিধা না হয়। সাউথ আফ্রিকান  ট্যুরিজিমের এমইআইএসইএ ও হাব হেড নেলিসওয়া নকানি জানিয়েছেন,  “এই রোডশোটি আমাদের বার্ষিক ইন্ডিয়া রোডশোর ১৯ তম সংস্করণ। বলাবাহুল্য, প্রতিবছরই আমরা ভারতীয় পর্যটকদের কাছ থেকে সাউথ আফ্রিকা ট্যুরের ব্যাপারে অভূতপূর্ব সাড়া পাই। আশা করব এবারও তার ব্যতিক্রম হবেনা। পর্যটনের ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে আমাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হল ভারত। কলকাতা, চেন্নাই এবং হায়দ্রাবাদ থেকে সাউথ আফ্রিকায় ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া  মুম্বাই এবং দিল্লির মত ঐতিহ্যবাহী পর্যটনের বাজারগুলিও ক্রমাগত উন্নতি লাভ করছে।

 এই উন্নয়নের গতি বাড়াতে তথা আরও বেশি করে ভারতীয়  পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সম্প্রতি চালু হওয়া আমাদের ক্যাম্পেনের দ্বিতীয় ধাপে আমরা সম্পূর্ণ দেশীয় এবং স্থানীয় বিষয়ের ওপর ফোকাস করেছি। তিনি বলেন, আমরা আমাদের এই  কাস্টমাইজড এনগেজমেন্ট মডেলের মাধ্যমে ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা বাড়াতে সক্ষম হব”।  দেখা গেছে, কলকাতার বেশিরভাগ পর্যটকরাই সাধারণত একা ঘুরতে ভালবাসেন। তাই ঘোরার নেশায় কলকাতার বেশিরভাগ মানুষ প্রায়ই ব্যবসা, ছুটি কাটাতে বা ভিএফআর-এর জন্য রেইনবো নেশনে যান।  তাছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় হল এই যে মহামারীর পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের নিয়মে যে শিথিলতা  জারি হয়েছে তাতে আশা করা যাচ্ছে যে অচিরেই চলতি বছরে ভারত থেকে সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিমের দ্রুত বর্ধনশীল বাজার হয়ে উঠবে কলকাতা। ভারত ও সাউথ আফ্রিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৩০ বছরের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদিক সম্মেলনে সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিমের তার সমৃদ্ধ ঐতিহ্যপূ্ণ সংস্কৃতি এবং উষ্ণ অতিথিপরায়ণতার জন্য প্রশংসিত হয়েছে। যা দুই দেশকে একত্রিত করে। বর্তমানে, এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস, কেনিয়া এয়ারওয়েজ এবং এয়ার সেশেলস সহ বেশ কয়েকটি স্টপ-ওভার ফ্লাইট ভারত থেকে সাউথ আফ্রিকায় যায়। সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম সম্পর্কে: সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম হল  সাউথ আফ্রিকান সরকারের পর্যটন বিপণন শাখা। যার কাজ হল,   দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিমের প্রচার  করা। তা অবসর, ব্যবসা, যে কোন অনুষ্ঠান বা পর্যটনের জন্য হোক না কেন। একটি সরকারী সংস্থা হিসাবে, সাউথ আফ্রিকান ট্যুরিজিম অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি,  শিল্পের পুনর্বন্টন সহ  সাউথ আফ্রিকান সরকারের উদ্দেশ্যগুলিতে অর্থপূর্ণভাবে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ওয়েবসাইট www.southafrica.net

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *