ডাঃ গনেশ কাধের মতে শৈশবকালীন অপুষ্টি খুবই ক্ষতিকর

পরিবারে কোনও শিশুর বৃদ্ধি যদি আশানুরূপভাবে না ঘটে তাহলে তা সকলের চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে। এরকম হলে পিতামাতা বা অভিভাবকদের পক্ষে তাদের সন্তানের ওজন ও উচ্চতা কীভাবে বয়স অনুপাতে সঠিক হয়ে উঠবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করাটা স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের আশাহত হওয়ার কোনও কারণ নেই। শিশুকে বৃদ্ধির সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করার জন্য যথাযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া যেতেই পারে। অ্যাবটের নিউট্রিশন বিজনেসের মেডিকেল অ্যান্ড সায়েন্টিফিক অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর ডঃ গণেশ কাধে অপুষ্টির একটি রূপ স্টান্টিং এবং পুষ্টি-ঘন খাবারের ভূমিকা সম্পর্কে বিশদ পরামর্শ দিয়েছেন।

ডঃ গণেশ কাধে জানিয়েছেন, অপুষ্টি বা অতিরিক্ত পুষ্টির ফলে হওয়া শৈশবকালীন অপুষ্টির কারণে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে খুবই ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এটি বিশ্বব্যাপী সুস্থতার উপর দীর্ঘ ছায়া ফেলে এবং পৃথিবীর প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনকে প্রভাবিত করে। ছোটোদের মধ্যে অপুষ্টির একটি সাধারণ রূপ হ’ল স্টান্টিং। এর ফলে শিশুরা তাদের বয়সের অনুপাতে স্বাস্থ্যকর উচ্চতা লাভ করতে পারে না। বর্তমানে সারা বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ১৪ কোটি ৯০ লক্ষ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন) একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে বিশ্বব্যাপী শৈশবকালীন স্টান্টিংয়ের এক-তৃতীয়াংশের জন্য ভারত দায়ী, যেখানে অপুষ্টিতে ভুগছে ৫ বছরের কম বয়সী ৪০.৬ মিলিয়ন শিশু।ডঃ গণেশ কাধের মতে পুষ্টি খুবই প্রয়োজনীয়, কারণ শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সম্ভাবনা শুরু হয় পুষ্টি দিয়ে। সঠিক পুষ্টি শিশুদের বৃদ্ধি ঘটাতে, শিখতে, উন্নতি করতে এবং গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্পর্শ করতে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করে। অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ, দুর্বল পুষ্টি-আত্মস্থকরণ, এবং/ অথবা অপর্যাপ্ত পুষ্টির কারণে অপুষ্টি হতে পারে। এটি বাচ্চাদের জন্য রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় ঘাটতি, কম্প্রোমাইজড কগনিটিভ ফাংশন, আচরণগত সমস্যা, হাড়ের স্বাস্থ্য হ্রাস এবং মাসল-মাস হ্রাসের ঝুঁকির ক্ষেত্রে গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এইজন্য, পুষ্টির ঘাটতি প্রাথমিক পর্যায়েই মিটিয়ে ফেলা গেলে তা তাদের সম্পূর্ণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।

ডঃ গণেশ কাধে জানান, বৃদ্ধি, কগনিটিভ ডেভেলপমেন্ট ও ইমিউন ফাংশনের জন্য সম্পূর্ণ, সুষম পুষ্টি খুবই দরকার। এই সমস্যার সমাধানটি সহজেই হতে পারে। বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় ভাল পুষ্টিকর খাবার যোগ করা উচিত। এর ফল সুদূরপ্রসারী হতে পারে। পিতামাতা এবং পরিচর্যাকারীদের উচিত তাদের সন্তানের বৃদ্ধির মূল্যায়ন করা এবং যদি তারা মনে করেন যে তাদের শিশু পিছিয়ে পড়ছে তাহলে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। কখনও কখনও, পুষ্টিকর পরিপূরক পানীয়গুলি পুষ্টির ফাঁকফোকর পূরণ করতে এবং খাবার থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের শোষণ বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। পুষ্টিকর পরিপূরক পানীয়ের উপযুক্ততা নির্ধারণের জন্য পিতামাতা ও অভিভাবকদের তাদের সন্তানের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত বলে জানান তিনি।ডঃ গণেশ কাধে বলেন, একটি শিশুকে তাদের সঠিক বৃদ্ধির সম্ভাবনায় পৌঁছাতে সহায়তা করার জন্য অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে এমন মূল পুষ্টিকর উপাদানগুলি হল ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, জিংক, ভিটামিন এ, প্রোটিন, তরল এবং ইলেক্ট্রোলাইটস।