সমর্পণ করলেন আরজি করের অধ্যক্ষ

‘রাতে একা সেমিনার হলে থাকা উচিত ছিল না’ এই মন্তব্যটি ছিল আরজি ট্যাক্স প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের ভুক্তভোগী প্রশিক্ষণার্থী ডাক্তার সম্পর্কে। তাই অনেক ছাত্র ও চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চলে যান। এই পুরো ঘটনায় তার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিবেশে তিনি আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি আর অপমানিত হতে পারি না’।  তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে কেউ জোর করেনি, আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি’। সন্দীপ আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমার পদত্যাগ চেয়েছিল। আশা করছি, এবার শিক্ষার্থী, জুনিয়র চিকিৎসকরা কাজে ফিরবেন। গত কয়েকদিনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের যে কটূক্তি সহ্য করেছি, আমার পরিবারও সহ্য করেছে, বাবা হিসেবে আমি লজ্জিত। তাই পদত্যাগ করেছি। আশা করি ভালো আছেন। মুখে কথা দিয়ে রাজনীতির খেলা চলছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিপক্ষ দলগুলো রাজনৈতিক খেলা খেলছে। আমি এই সব খেলা কখনও খেলিনি, আমি একজন সরকারী কর্মচারী। সেই দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত পালন করব। আশা করি শিগগিরই শিক্ষার্থীরা কাজে যোগ দেবে’। এদিকে, অধ্যক্ষের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের বিষয়ে, প্রতিবাদী ছাত্র এবং জুনিয়র ডাক্তাররা সন্দীপকে লিখিত আকারে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এর আগে গতকাল আরজি কর মামলায় অনেক বদলি করা হয়। তবে বিক্ষোভকারীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছেন। অভিযোগ, ঘটনার পর মৃত চিকিৎসকের ঘাড়ে ‘দায়’ চাপিয়ে দেন এই অধ্যক্ষ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ডক্টর সন্দীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘সেমিনার হলে রাতে ওই ডাক্তারের একা থাকা উচিত হয়নি’। তার এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি পোস্ট করে, শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন যে আরজি কর মেডিকেল কলেজ থেকে বেশ কয়েকবার সরিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও, তাকে এখানে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। অধ্যক্ষের এই মন্তব্য ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আর এর মধ্যে শুভেন্দু পোস্ট করেছেন ‘প্রভাবশালী’ সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে।

উল্লেখ্য, দুদিন আগে হাসপাতালের চতুর্থ তলায় একটি সেমিনার হলে আরজি কর-এর চেস্ট মেডিসিন বিভাগের এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। ওই ঘটনায় হাসপাতালের সুপারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এ অবস্থায় সুপারের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন অনেকে। সেভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এদিকে এসিপি উত্তর চন্দন গুহকেও সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, পুলিশ প্রাথমিকভাবে মৃত চিকিৎসকের বাড়িতে জানায় যে তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ অবস্থায় পুলিশের ভূমিকা উঠে আসে। আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন, এমন পরিস্থিতিতে প্রথমে রক্তাক্ত দেহ দেখে পুলিশ আত্মহত্যার দাবি করল কীভাবে এবং কেন?