বানরের মা তার সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে তাঁর শিশুকে রক্ষা করলেন

জলপাইগুড়ি: সন্তানকে বাঁচাতে রণং দেহি মা! মশারির জালে আটকে পড়া ছোট্ট শিশুকে রক্ষা করতে হাজির  গোটা বাহিনী। বলা হচ্ছে জলপাইগুড়ির বাঁদর বাহিনীর কথা। আসলে সব মা’ই সন্তানদের আগলে রাখে প্রাণ দিয়ে। মনুষ্য হোক কিংবা বন্যপ্রাণ, মায়ের মমত্ব যে একই তার প্রমাণ মিলল এদিনের ঘটনায়। খাবারের খোঁজে বাদর বাহিনীর দল হামেশাই চলে আসে লোকালয়ে। এদিন জলপাইগুড়ির পাতকাটা কলোনিতে দেখা মেলে একদল বাঁদরের।কিন্তু এই দিনের ঘটনাটা অন্য আর পাঁচ দিনের তুলনায় অনেকটাই আলাদা বটে। খাবারের খোঁজে ঘরের ভেতরে ঢুকে খাবার নষ্ট করা থেকে শুরু করে বাগানের ফল ফুল সবজির গাছ নষ্ট করা…বাঁদরের কীর্তিতে যখন অতিষ্ট স্থানীয়রা ঠিক তখনই চোখে পড়ে এক করুণ দৃশ্য। ছাদে মেলে রাখা মশারির জালে আচমকাই আটকে পড়ে একটি বাচ্চা বাঁদর।

 আর তাকে বাঁচাতেই দিশাহীন মা বাদরের প্রাণপণ চেষ্টা হৃদয় স্পর্শ করে বৈকি! তবে সেই দিশাহীন মাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় অন্যান্য বাঁদরের দল। কার্যত আটকে থাকা বাচ্চাটির সেই জায়গাটি জুড়ে ঘেরাটোপ তৈরি করে অন্যান্য বাঁদরেরা। একদিকে স্থানীয়দের কেউ এগোলেই তাকে আছড়ে কামড়ে দেওয়ার প্রবণতা অন্যদিকে, নিজেরাও উদ্ধার করতে না পেরে হতাশ হয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে বাদরের দল। প্রায় তিন থেকে চার ঘন্টা চলে এমন কান্ড কীর্তি।

পরবর্তীতে পরিবেশপ্রেমী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরীকে খবর দিলে তিনি এসে বহু প্রচেষ্টা চালিয়ে সেই ছোট্ট বাচ্চাটিকে সেই মশারি জল থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হন।কিন্তু অবাক করে ততক্ষণ অবধি শান্তভাবেই অপেক্ষা করছিল বাঁদরের দল। বাচ্চাটিকে উদ্ধার করা হলেই চটজলদি বুকে নিয়ে পাড়ি দেয় তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে। তবে এদিনের এ ঘটনা শিখিয়ে যায় অনেক কিছু। আজকালকার দিনে কোনও মানুষ বিপদে পড়লে কাউকে পাশে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। সেখানে বাঁদর কুলের কেউ একজন বিপদে পড়লে হাজির হয় গোটা বাঁদর বাহিনী। অন্যদিকে, মানুষ হোক কিংবা বন্যপ্রাণ সন্তানদের প্রতি ভালোবাসায় মায়েদের কখনওই খামতি হয় না!