মাছে ভাতে বাঙালি, মাছে রয়েছে স্বাস্থ্যকর অনেক উপাদান। তাই চিকিৎসকরাও পাতে কিছু মাছ রাখতে বলেন। কিন্তু সেই মাছও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। সাধারণ মাছ হোক বা সামুদ্রিক মাছ। একটি ‘বিষ’ যা কার্সিনোজেনিক উপাদানের উপস্থিতির কারণে মাছের স্বাদকে তিক্ত করে তুলতে পারে। ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। যেভাবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছে মেশানো হচ্ছে ফরমালিন। যা কাঁচা মাংসের শেলফ লাইফ বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। আর ফরমালিন মিশ্রিত মাছের মাধ্যমে বিষাক্ত কার্সিনোজেন সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে মানুষের পেটে। ক্যান্সারের সম্ভাবনা ও ঝুঁকি বাড়ায়। প্রচুর ফরমালিনের মধ্যে মারাত্মক ফর্মালডিহাইড থাকে যা কিডনির জন্য বিষাক্ত। ফরমালিন প্রতিদিন শরীরে প্রবেশ করলে কিডনি তা সহ্য করতে পারবে না বলে জানান তিনি। আর শরীরে কার্সিনোজেনিক উপাদান দ্রুত উঠে যাবে।
গুরুগ্রামের সিকে বিড়লা হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের পরামর্শক ডাক্তার মোহিত খিরবাত বলেছেন, ফরমালিন কিডনির বিষ (বিষাক্ততার ঝুঁকি) হিসাবে পরিচিত। এর প্রভাব মানুষের অন্ত্র থেকে কিডনি পর্যন্ত মারাত্মক হতে পারে। প্রদাহ থেকে কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়া পর্যন্ত, ফরমালিন ধীরে ধীরে একজন ব্যক্তির ক্ষতি করতে পারে এবং মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেতে পারে। এমনকি খুব অল্প পরিমাণে ফরমালিন যদি শরীরে পৌঁছায় এবং ক্রমাগত টানতে থাকে তবে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। শ্বাসকষ্ট হতে পারে। অর্থাৎ ফুসফুসের মতো অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।
গুরুগ্রামের ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান ডঃ সলিল জৈন বলেন, যখন মাছকে তাজা রাখতে অ্যামোনিয়া ফরমালিন ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়, তখন তা মাছের সঙ্গে মিশে যায় এবং বিষাক্ত করে তোলে। আর সেই মাছ মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্যান্সারের অস্তিত্বকে উন্মোচিত করে। আমেরিকান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর এই বিষয়ে একটি গবেষণা রয়েছে এবং এতে মাছে ফরমালিনের ব্যবহার এবং এর ক্ষতিকর প্রভাবের কথাও বলা হয়েছে। যখন ফরমালিন প্রিজারভেটিভ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন শরীরে টক্সিক জমে যাওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
ডাঃ জৈন আরও বলেন, খাদ্য সংরক্ষণে ফরমালিনের ব্যবহার শুধু বেআইনি নয়। এটি মারাত্মকও বটে। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ফরমালিন মেশানো বিষাক্ত মাছ না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। মাছে ফরমালিন মেশানোর এই অসাধু প্রথা এড়াতে তিনি খাদ্য নিরাপত্তা বিধি কঠোরভাবে পালন ও জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।